নতুন বাংলাদেশে বদলাবে দৃষ্টিভঙ্গি
১১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৭ এএম | আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৭ এএম

বিদেশি বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরি হয়েছে, ধারাবাহিক মনিটরিং ও যোগাযোগ রাখা হবে : বিডা
১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিশ্চিতে তথ্যবহুল ও সাবলীল ভাষায় ভাষায় দেশের সম্ভাবনাময়ী খাতগুলো তুলে ধরায় বিডা চেয়ারম্যানের ব্যাপক প্রশংসা
বেকারত্ব ঘুচিয়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের বিকল্প নেই। অথচ গত কয়েক বছর ধরেই জিডিপির অনুপাতে বাংলাদেশে বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ছিল না। এমনকি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তায় দেশে এখন ছয় বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে রয়েছে বিদেশি বিনিয়োগ। আর তাই অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিনিয়োগ বাড়ানোর দিকে জোর দিচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার। এরই অংশ হিসেবে গত সোমবার থেকে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে শুরু হয়েছে চারদিন ব্যাপী বিনিয়োগ সম্মেলন। গতকাল বৃহষ্পতিবার শেষ হয়েছে যেখানে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে তুলে ধরা হয়েছে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী অর্থনৈতিক সংস্কারের পূর্বাপর। পাশাপাশি বাংলাদেশকে নতুনভাবে তুলে ধরার একটি সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে দীর্ঘদিন বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল তা কাটিয়ে ওঠারও প্রচেষ্টা। এ জন্য ১০ বছর পর বাংলাদেশ কেমন হবে সেই আভাস দেয়া হয়েছে এবারের সম্মেলনে। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাপারে বিশ্বের ধারণা চেঞ্জ করা হয়। তবে এই সম্মেলনের বিশেষত্ব একটি দেশের প্রধান হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই সম্মেলনের তদারকি করেছেন। বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের উৎসাহ দিতে তাদের সঙ্গে সময় দিয়েছেন। এমনকি বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের কি সুযোগ-সুবিধা আছে, কেন বিনিয়োগ করবে এ জন্য কোন গোপনীয়তা না রেখে সরেজমিন পরিদর্শনে পাঠানো হয়েছে ৫০ দেশের বিনিয়োগকারীদের। সম্মেলনে অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস নিজেই দেশের বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন। সেই সম্ভাবনা যেন সম্মেলনের মধ্যেই ফুটে উঠেছে ঐতিহাসিক বেশ কিছু চুক্তির মাধ্যমে। এরমধ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সাথে ‘আর্টেমিস চুক্তি’ সই করেছে। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর বড় বড় দেশ বিনিয়োগের জন্য চুক্তি করেছে। নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এনডিবি) বাংলাদেশে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। হাজার কোটি টাকার বড় বিনিয়োগ পেয়েছে পণ্য বিপণনকারী দেশি প্রতিষ্ঠান প্রাণ আরএফএল। চীনা আরএমজি প্রতিষ্ঠান হান্ডার সাথে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। শপআপ ১১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে। সরকার আশা করছে দুই-এক বছরে দেশে ১৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। সম্মেলনে ১০০-১২০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট সেবা দিয়েছে বিশ^খ্যাত স্টারলিংক। যারা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদনও পেয়েছে। এছাড়া সম্মেলনে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বন্দর পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড নৌ-পথে পণ্য পরিবহন খাতে বড় পরিসরে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি বঙ্গোপসাগরের উপক‚লে নতুন বন্দর নির্মাণে সহায়তা করে বাংলাদেশকে একটি বৈশ্বিক রফতানি কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। এদিকে ধীরে ধীরে দেশকে বৈশ্বিক বিনিয়োগের জন্য উপযোগী করে তুলতে গিয়ে ব্যাপক প্রশংসায় ভাসছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। বিশেষ করে গত বুধবার বিনিয়োগ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একটি প্রেজেন্টেশন দিয়েছেন। তথ্যবহুল ও সাবলীল ভাষায় দেশের সম্ভাবনাময়ী খাতগুলো তুলে ধরার সেই ভিডিও ইতোমধ্যে সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার এই প্রেজেন্টেশন মন কেড়েছে সর্বমহলের। তাঁর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিনিয়োগ সম্মেলন, দেশে এসেছে বিশ্বের বড় বড় সব বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান। সেখানে আশিক চৌধুরীর লক্ষ্য- ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ নিশ্চিত করা, যা দেশের তিন কোটি মানুষের জীবন পরিবর্তন করে দেবে। কম হলেও এক লাখ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এক বিনিয়োগ সম্মেলন দিয়ে আশিক চৌধুরী তাঁর নেতৃত্ব, দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। যদিও ইতোমধ্যে পুরষ্কার হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূস মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে আশিক চৌধুরীকে সিনিয়র সচিব থেকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা প্রদাণ করেছেন। এছাড়া সম্মেলনের শুরু দিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর আশার কথা শুনিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, নতুন উদ্যোক্তাদের সহায়তা দিতে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তিনি জানান, বিশেষ এই তহবিলের অর্থ বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে বিতরণ করা হবে এবং শুধু স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোকে মূলধন জোগান দেওয়া হবে। এই বিষয়ে শিগগিরই একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম রাশিদুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আমার জানা মতে- বিশে^ প্রথম কোন সম্মেলন যেখানে একটি দেশের প্রধান দায়িত্ব নিয়ে তদারকি করছেন। দিনভর খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। বিনিয়োগে আসা অতিথিদের সময় দিচ্ছেন। এমনকি বিনিয়োগকারীরা কেন বিনিয়োগে আসবেন, কি সুযোগ-সুবিধা আছে তা সরেজিমেনে পরিদর্শণ করাচ্ছেন। যে কারণে এবারের বিনিয়োগ সম্মললন সফল হবেই। বিশেষ করে বৈশি^ক বিনিয়োগ আকর্ষণে সম্মেলনের নানা আয়োজন এবং বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর নেতৃত্ব ও দক্ষতার প্রশংসা করেন। যা বিনিয়োগ আকর্ষণে আনেকটা কার্যকরী ভ‚মিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। ইতোমধ্যে বড় বড় বিনিয়োগের চাহিদা এসেছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশ এর সুফল পাবে বলে উল্লেখ করেন রাশিদুল ইসলাম।
বিনিয়োগ সম্মেলনটি শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পর্যায়ও ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সম্মেলনের শেষে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের মনে প্রশ্ন, বহুল আলোচিত এ বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রাপ্তি কতটুকু? যদিও বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিকুর রহমান বিনিয়োগ প্রতিশ্রæতি পাওয়া-না পাওয়ার হিসাব-নিকাশ নিয়ে মোটেই উদ্বিগ্ন নন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নেতিবাচক ধারণা পোষণ করে। বিনিয়োগকারীদের অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশে বিনিয়োগের মোটেও পরিবেশ নেই। তাদের এই মনে করার পেছনে যৌক্তিক কারণও রয়েছে। অতীতের সরকারের আমলে অনেক বিনিয়োগকারী এদেশে বিনিয়োগের ইচ্ছা নিয়ে এলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং নানা হয়রানি ও অসহযোগিতার কারণে ফিরে গেছেন। ফলে এবারের সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশ সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠে ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করা বলে উল্লেখ বিডা চেয়ারম্যান।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বিশ্বখ্যাত নামিদামি ব্র্যান্ড ইন্ডিটেক্স গ্রæপ, ডিপি ওয়ার্ল্ড, জিওডারনো ও এক্সিলারের এনার্জিসহ কোম্পানির অনেক বিনিয়োগকারী রয়েছেন। এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত বিনিয়োগকারী কোম্পানির শীর্ষ নীতি নির্ধারকরা বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কেউ কেউ এক ধাপ এগিয়ে বিনিয়োগ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছেন। আন্তর্জাতিক মহাযান সংস্থা নাসার সঙ্গে চুক্তির বিষয়টিও বিশেষ উল্লেখযোগ্য। গতকাল শেষ দিনেও দেশের বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের সাথে বিনিয়োগ চুক্তি করেছে বিদেশি অনেক প্রতিষ্ঠান। ছিল অ্যাপারেল ও টেক্সটাইল এবং ডিজিটাল ইকোনমি নিয়ে পৃথক সেমিনার।
বিনিয়োগ সম্মেলনের সমাপনী প্রেস ব্রিফিংয়ে বিডা’র বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি জানিয়েছেন এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগের পাইপলাইন তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে যেসব প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগের প্রস্তাব কিংবা প্রতিশ্রæতি দিয়েছে তাদের সঙ্গে ধারাবাহিক যোগাযোগ করা হবে। বিনিয়োগ পেতে করা হবে ধারাবাহিক মনিটরিংও।
বিডার বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী যারা বাংলাদেশে এসেছেন তারা যেন সত্যিকারের বিনিয়োগ করে, সেজন্য তাদের আমরা ধারাবাহিকভাবে মনিটরিং করব। বিনিয়োগকারীরা সাধারণত ১৮ থেকে ২৪ মাস সময় নেয় বিনিয়োগ করতে, তাদের সঙ্গে আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধরে যোযোগাযোগ করব। আমাদের এখানে সাড়ে ৫০০ রেজিস্ট্রেশন ছিল, এর মধ্যে সাড়ে ৪০০ বিদেশি প্রতিনিধি এসেছেন। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দুজন প্রতিনিধি এসেছেন। পূর্ণাঙ্গ বিনিয়োগ ও বিনিয়োগকারীর তথ্য আমরা পরবর্তীতে জানাব। তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীরা কয়েকটি চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছেন। নীতির ধারাবাহিকতা, একসেস টু রিসোর্স ও দুর্নীতির চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেছেন। আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আমাদের রয়েছে, তা দূর করার চেষ্টা চলছে। এক প্রশ্নের জবাবে নাহিয়ান রহমান রোচি বলেন, শুধু এনবিআর নয়, সরকারি সেবায় ধীরগতি আছে। আমরা আন্তমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের জন্যে পদক্ষেপ নিচ্ছে। এনবিআরের গ্রীণ চ্যানেল তৈরি করা হচ্ছে। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সামিট উপলক্ষ্যে চীনা আরএমজি প্রতিষ্ঠান হান্ডার সাথে ১৫০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে। এছাড়া শপআপ ১১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী মর্যাদার) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, সকল রাজনৈতিক দলবিশেষ করে-বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অনেককেই বিনিয়োগ সম্মেলনে আনা হয়েছে। তারাও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বিনিয়োগ পরিবেশের কথা বলেছেন। আমরা একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করেছি। চিন্তা-ভাবনা করেছি ফ্রি ট্রেড জোন (মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল) করা হবে। মাতারবাড়ীর কাছাকাছি এটা করা হবে। আমরা নীতিগতভাবে মনে করি প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশে প্রতিরক্ষা শিল্পে বিনিয়োগ করা দরকার।
আশিক চৌধুরী বলেন, এই সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় বিনিয়োগকারীরা এসেছেন। বিশ্বের নামকরা কোম্পানি ডিপি ওয়ার্ল্ডের চেয়ারম্যানসহ অনেকেই সম্মেলনে এসেছেন। যারা কখনো আগে আসেননি তাদের মধ্যে যে নেতিবাচক মনোভাব ছিল, তা দূর হয়েছে। তারা বিনিয়োগে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। তারা এ দেশে অনেক খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী। তার মধ্যে টেক্সটাইল, গার্মেন্টস, ফার্মাসিউটিক্যালস, ইঞ্জিনিয়ারিং অন্যতম। বাংলাদেশের বাজারে দীর্ঘমেয়াদে থাকার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন হোলসিম গ্রæপের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের প্রধান মার্টিন ক্রিগনার। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ প্রতিশ্রæতি পুনর্ব্যক্ত করেন। গতকাল একটা ইয়ুথ (যুব) সেশন হয়েছে। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা অনেক গল্প শুনিয়েছেন তাদের। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক বন্দর পরিবহনকারী প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড-এর গ্রæপ চেয়ারম্যান ও সিইও সুলতান আহমেদ বিন সুলায়েম। তারাও বিনিয়োগের ইচ্ছে পোষন করেছেন।
তবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলনের বিভিন্ন সেমিনারে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারী ও অর্থনীতিবিদরা বলেন, বাংলাদেশে শিল্পের জন্য এখনো অতিরিক্ত দামে গ্যাস-বিদ্যুৎ কিনতে হচ্ছে। এর ফলে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। তাই বিদেশি বিনিয়োগ টানতে নীতি ও কাঠামোগত পরিবর্তনের দিকে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আসতে চান না, কারণ তাদের কাছে আরও ভালো বিকল্প দেশ রয়েছে। এ দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম বড় বাধা নীতির ধারাবাহিকতা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না থাকা। এ ছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়হীনতাসহ আরও কিছু বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কথা তুলে ধরেছেন।
সিপিডি নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পর আন্তর্জাতিক বাজারের শুল্কমুক্ত সুবিধা কমবে। রফতানি প্রতিযোগিতার বাজার কীভাবে টিকে থাকবে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ আনতে হলে দক্ষ মানবসম্পদের উন্নয়ন প্রয়োজন।
জাপান-বাংলাদেশ চেম্বারের সভাপতি তারেক রাফি ভ‚ঁইয়া বলেন, বর্তমান বিনিয়োগকারীদের প্রতি নজর বাড়াতে হবে। তাদের বিদ্যমান সুবিধাগুলো অব্যাহত রাখতে হবে। এর মাধ্যমে আরও বেশি বিনিয়োগকারী আকর্ষণ করা সম্ভব। পাশাপাশি ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ ইন্ডাস্ট্রি বড় করতে হবে।
বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ একটি পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যমান নীতিগুলো নিয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। বিনিয়োগসংক্রান্ত ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলোর সমাধান করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার অবকাঠামোতে বেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করছে। কেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ করবে, এ প্রশ্নটি সবসময় আসে। এ বিষয়ে বলব, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের নবম ভোক্তা বাজার হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের শক্তিশালী জনবল আছে। বিনিয়োগবান্ধব নীতি আছে।
তবে ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবীদদের এসব চ্যালেঞ্জ নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণে বাধা হবে না বলে মনে করেন বিডার চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি বলেন, গত ফেব্রæয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দুই দেশের বাণিজ্য-ঘাটতি নিয়ে কথা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম আলোচনার বিষয় ছিল জ্বালানি রফতানি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে জ্বালানি রফতানি শুরু হলে মধ্যপ্রাচ্যের ওপর থেকে আমাদের নির্ভরশীলতা কিছুটা কমবে। ফলে দেশে ব্যবসার ক্ষেত্রে জ্বালানির ঘাটতি কিছুটা কমবে।##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ইবিতে পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা দিলো সহ-সমন্বয়করা

মানিকগঞ্জে আ.লীগ নেতা ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর উজ্জ্বল হোসেনে গ্রেফতার

পেকুয়ায় একদিনে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত- ২০

ছয় গোলের রোমাঞ্চ শেষে বার্সা-ইন্টার

চেন্নাইয়কে বিদায় করে শীর্ষ দুইয়ে পাঞ্জাব

সেমিফাইনালে হেরে আল নাসেরের বিদায়

দুদকের মামলা : আমানউল্লাহ আমান ও তার স্ত্রীর দন্ডাদেশ বাতিল

অন্তর্বর্তী সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে অর্থনীতি আরো সঙ্কটে পড়েছে : রিজভী

বাংলাদেশ-মিয়ানমার একমত হলে করিডোর চালু করতে পারে জাতিসংঘ

কলকাতায় হোটেলে আগুন নিহত ১৪

ইউক্রেন খুব শিগগিরই ‘ধ্বংস’ হবে: ট্রাম্প

টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়কে অবরোধ

প্রশ্ন : ঈদের বাজারে জীনদের বাজার করা প্রসঙ্গে।

ভ্যান চালক হত্যাচেষ্টা: অভিনেতা সিদ্দিকের ৭ দিনের রিমান্ডে

রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা ছাড়া রাখাইনে মানবিক করিডোর দেয়া থেকে বিরত থাকুন

প্রোটন বাজারে আনল দেশীয় অ্যাসেম্বল এক্স৭০ এসইউভি গাড়ি

হজযাত্রীদের জন্য বাংলাদেশি টাকায় রবির রোমিং প্যাকেজ

উত্তরপ্রদেশে মুসলিম ছাত্রের উপর অমানবিক অত্যাচার

দেশের স্থিতিশীলতার জন্য দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি: কাজী শিপন

ফেনীতে প্রধান উপদেষ্টার আবাসন পেল বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ পরিবার